একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্নযুক্ত সংখ্যাগুলোকে যখন গাণিতিক অপারেটর দিয়ে লেখা হয় তখন সেটাকে আদর করে বলা হয় ধারা। ধারা অনেক ধরনের আছে, সমান্তর ধারা, গুণোত্তর ধারা, ফিবোনাক্কি ধারা এমন অনেক ধারা আছে। এই লেখাটা মূলত গুণোত্তর ধারা নিয়ে গুণোত্তর ধারার n তম পদ। n তম পদ দিয়ে বোঝায় যেকোনো পদ।
যে ধারায় প্রতি পদের অনুপাত সমান হয় তাকে গুণোত্তর ধারা বলে। এই সঙ্গা দিয়ে কিছু বোঝা গেল না! সঙ্গা দিয়ে কোনো কাজ নেই। আমার ধারাটাকে বোঝার চেষ্টা করি। একটা ধারা আছে সেই ধারার আগের যেকোনো পদ দিয়ে যদি সেই পদের ঠিক পরের পদকে ভাগ দেই আর যদি সবসময় এই ভাগফলটা একই আসে
(অনুপাত সমান হয়) তাহলে সেই ধারাকে আমরা আদর করে বলি গুণোত্তর ধারা।
এই ধারার বৈশিষ্ট্যটাকে এভাবে বলা যায়, এই ধারায় নির্দিষ্ট একটা সংখ্যা প্রতি পদের সাথে গুণ হয়ে পরের পদ তৈরি করে। ফিবোনাক্কি ধারায় যেমন দুইটা পদ যোগ করে পরের পদ পাওয়া যায় ঠিক তেমনি একটা সংখ্যা প্রত্যেক পদে গুণ হয়ে পরের পদ তৈরি করে। যেমনঃ ২+৪+৮+১৬…
আমরা যদি গুণোত্তর ধারার বৈশিষ্ট্যটা বুঝতে পারি তাহলে এই ধারাটার একটা General Form বা বীজগাণিতিক রূপ দিতে পারবো। কিন্তু তার জন্য কিছু কাজ করতে হবে। আমরা ধরে নেই ধারার প্রথম পদটা হলো a, আর প্রতি পদে যে সংখ্যাটা গুণ হবে সেটা হলো r (ratio)। এখন General Form টা হবে।
a+ar+(ar×r)+(ar×r×r)+....
a+ ar^2 + ar^3 +...
এখানে প্রথম পদ a এর সাথে r (নির্দিষ্ট সংখ্যা, যেট প্রতি পদে গুণ আকারে থাকে) গুণ হয়ে দ্বিতীয় পদ, দ্বিতীয় পদের সাথে r গুণ হয়ে তৃতীয় পদ তৈরি করে, এভাবে ধারাটা চলতে থাকে। এখানে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, প্রথম পদে কিন্তু r গুণ আকারে থাকে না। কারণ ধারাটা তো সেখানে থেকেই শুরু। কেউ যদি জোরাজুরি করে যে সে প্রথম পদে r গুণ আকারে রাখবে তাহলে সেই হিসেবে ধারা সাজাতে হবে, তখন প্রথম পদ আর a থাকবে না, ar হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা স্টেন্ডার্ড ফর্মে প্রথম পদ a ধরে নিব।
যদি আমরা এই General Form টা বুঝে থাকি তাহলে n তম পদের সূত্রটাও সহজ হবে। n তম পদের সূত্রে জন্য শুধু একটা জিনিস লাগবে, সেটা হলো কবিতা আবৃত্তি। বিশ্বাস করো শুধু কবিতা আবৃত্তি করতে পারলেই সূত্রটা বোঝা যাবে (General Form টাকেই সূত্র বলে)। নির্মলেন্দু গুণের ভাষায়–
❝গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তার অমর কবিতাখানি❞
চলো আমরা বীজগাণিতিক রূপ থেকে কবিতা আবৃত্তি করি।
ধারার প্রত্যেক পদে a থাকবে কারণ a এর সাথেই তো ঐ সংখ্যাটা গুণ হয়েছে। এখন কিভাবে গুণ হলো কয়টা গুণ হলো সেট আবৃত্তি করি—
প্রথম পদে – ১টা a, ০ টা r
দ্বিতীয় পদে –১টা a, ১টা r
তৃতীয় পদে – ১টা a, ২টা র
(r বলতে কয়টা r গুণ আকারে আছে)
চতুর্থ পদে – ১টা a, ৩টা r
তাহলে যেকোনো পদে – ১টা a, যতটা পদ তার চেয়ে ১টা r কম গুণ আকারে থাকবে। আর যেকোনো পদ মানেই n তম পদ।
বারবার একটা সংখ্যা গুণ হলে সূচক আকারে লেখা যায়। তাই
n তম পদ হবে– ar^(n-1)
মানে n-1টা r গুণ আকারে থাকবে।
ধন্যবাদ শ্রদ্ধাষ্পদেষু নির্মলেন্দু গুণকে তার কবিতার মাধ্যমে আমাদের সাথে থাকার জন্য!