টেস্টি ডিনার



শাহেদ অপ্রকৃতিস্থের মতো ছুটে এসে ক্যাপ্টেন হিলবার্টকে বলতে লাগল,

"স্যার, আমার কিছুদিন যাবত মনে হচ্ছিল যে আমাদের স্পেসশিপে কিছুটা গন্ডগোল আছে। আমি হিসেবে করেছিলাম যে ফুয়েল আছে তা দিয়ে এক সপ্তাহ চলে যাবে। কিন্তু কম্পিউটার বলছে ফুয়েল দিয়ে আর দুই তিন দিন চলবে।"


ক্যাপ্টেন হিলবার্ট বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইলেন। 

 "হোয়াট!!! কিভাবে সম্ভব এটা?"

"স্যার আমার মনে হয় ফুয়েল কোনো জায়গা থেকে লিক হচ্ছে। আর শিপের ঐ জায়গায় কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই যে এখান থেকে চেক করে ব্যবস্থা নিব। আমাদের শীগগির ফুয়েলের ট্যাংক অবজার্ভ করা উচিত। আপনি পার্মিশন দিলে আমি আর মি. বার্টনার গিয়ে চেক করে আসব। মিস্টার বার্টনার দক্ষ প্রযুক্তিবিদ।"


"ওকে, তাই করুন।"


২.


শাহেদ  আর মি. বার্টনার স্যুট পড়ে ফুয়েলের ট্যাংক পর্যবেক্ষণ করতে বের হয়েছি। বার্টনার সবকিছু পর্যবেক্ষণ করে বললেন,

"মি. শাহেদ, সব তো ঠিকই আছে!"

"আপনি ভালো করে দেখেছেন তো?"

"ইয়েস, আপনি আপনার হিসাব চেক করুন।" 

শাহেদ হেসে বলল, "মি. বার্টনার আমি জানি সব ঠিক আছে।"

বার্টনার রাগান্বিত হয়ে  কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল, তখন শাহেদ বলল, "মি. বার্টনার আপনার মনে আছে, ইউরোপে একবার এক ছেলে পার্মিশন নিয়ে নিজের পায়ের মাংস খেয়েছিল? আসলে ক্যানিবালিজম আমাকে সবসময় আনন্দ দেয়। আমি যখন পৃথিবীতে আমার দেশে ছিলাম, তখন আমি আমার স্ত্রীকে হত্যা করি। বিশ্বাস করেন, তার মাংস এতো মজার ছিল যে, এই স্পেসে এসে আমি ঐস্বাদ ভুলতেই পারি নি। আমার খালি ঐ স্বাদ নিতে ইচ্ছা করে। আপনার তো আর সৌভাগ্য হয় নি, তাই বুঝবেন না মানুষের মাংস কত টেস্টি। আসলে ফুয়েল লিক হওয়াটা ছিল আমার প্লান। আমি আসলে আপনাকে টেস্ট করতে এসেছি। ইউরোপিয়ানদের মাংস কখনো টেস্ট করা হয় নি, আশা করি ভালোই লাগবে!"


কথা শেষ করে শাহেদ পাগলের মতো হাসতে  লাগল। বার্টনার ঘেমে অস্থির। সে তার স্ক্রু-ড্রাইভার দিয়ে শাহেদকে মারার চেষ্টা করল। তার আগেই শাহেদ নিজের ধারালো ছুরি দিয়ে তাকে ছিন্নভিন্ন করে দিল। পুরো রুমটা রক্তে ভেসে গেছে। শাহেদ বার্টনারের  তার হাত থেকে এক দলা মাংস তুলে তার বডিটাকে মহাশূন্যে ফেলে দিল! 


শাহেদ খুব আরাম করে মাংসটা খেল। না, ইউরোপিয়ানদের মাংস বাঙালীদের থেকেও টেস্টি। তারপর খুব যত্নে রুমটা পরিষ্কার করল।


৩.


শাহেদ মরিয়া হয়ে কাঁদছে আর বলছে,

"ক্যাপ্টেন, কিভাবে যে বার্টনার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল আমি বুঝতেই পারছি না। আমি… আমি কত চেষ্টা করেছি!"


"ইট ওয়াজ এন এক্সিডেন্ট। বার্টনারের জন্য আমরা শোকাহত। আগে বলুন কাজ হয়েছে কিনা?"


" না, ক্যাপ্টেন।"


" আপনি আজকে রেস্ট করুন। আগামীকাল সোফিয়াকে নিয়ে আরেকবার যাবেন। এবার একটু সাবধানে কাজ করবেন।"


"ওকে, ক্যাপ্টেন"


শাহেদ কাঁদতে কাঁদতে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। বেরিয়ে গালটা পরিষ্কার করে একটা হাসি দিল, বিভৎস হাসি। আগামীকাল আবার টেস্টি ডিনার হবে!!!





Oyahidur Rahman Mohin

I am Mohin. Reading, writing and thinking are my passion. I usually write fiction and non-fiction for pleasure. And I am trying to touch the tune of life. "Life is really very simple but we insist on making it complicated."

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম