রসায়নের মহাকাব্যঃ জৈব রসায়ন (পর্ব ৩)

 ★বেনজিন রিং যেভাবে শক্তির ভারসাম্য রক্ষা করে


১. অ্যারোমেটিকের অ্যারোমা 

গত আলোচনায় আমরা দেখেছিলাম, সম্পৃক্ততা ও অসম্পৃক্ততা এবং অ্যালিফেটিক হাইড্রোকার্বনের কিছু প্রাথমিক বৈশিষ্ট্য। এখন আমরা যুক্তি দিয়ে অ্যারোমেটিকের অ্যারোমা (সুগন্ধ) বোঝারা চেষ্টা করব। 


আমরা দেখেছি, অ্যালকেনরা সম্পৃক্ত আর অ্যালকিন, অ্যালকাইনরা অসম্পৃক্ত। C2H6 বা ইথেনকে যদি আমি হাইড্রোক্সিল মূলকের সাথে বিক্রিয়া করাতে চাই তাহলে কি হবে?

 

দেখ, ইথেনে প্রত্যেক কার্বনের চারটা বন্ধনেই কোনো না কোনো পরমাণু আছে। প্রত্যেক কার্বনের এক বন্ধনে অন্য কার্বন এবং বাকি বন্ধনে হাইড্রোজেন আছে। তাহলে –OH মূলকের সাথে বিক্রিয়া করাতে হলে অবশ্যই একটা বন্ধন খালি করে সেখানে –OH আনতে হবে। আরও সহজে বললে একটা হাইড্রোজেনকে সরাতে হবে, তার জায়গায় হাইড্রোক্সিল মূলক আনতে হবে  (কার্বনকেও সরানো যায়, সেক্ষেত্রে যৌগটা ১ কার্বন বিশিষ্ট হবে)।


C2H6 + -OH→ C2H5OH + H2 


দেখ তো এটা কি ধরনের বিক্রিয়া? এটা হচ্ছে প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া। (উৎপন্ন যৌগটা অ্যালকোহল) তাহলে আমরা এখান থেকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারি, অ্যালকেনরা সম্পৃক্ত যৌগ হওয়ায় তারা প্রতিস্থাপন বিক্রিয়ায় অংশ নেয়।


এবার অসস্পৃক্ত যৌগদের বিশ্লেষণ করা যাক। C2H4 এটা অ্যালকিন সমগোত্রীয় শ্রেণির যৌগ। এর দুইটা কার্বন পরস্পর দ্বিবন্ধনে এবং বাকিগুলো হাইড্রোজেনের সাথে একক বন্ধনে যুক্ত। এখন যদি, ইথিনের সাথে হাইড্রোজেনের বিক্রিয়া হয়। তাহলে কি ঘটবে? 


দেখ, ইথিন যেহেতু অসম্পৃক্ত, সে অতি সহজে তার দ্বিবন্ধন ভেঙে ফেলবে (কারণ তার সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা পূর্ণ নেই)। ফলে প্রতেক কার্বনে একটা করে দুইটা বন্ধন মুক্ত হবে বা হাত খালি হবে। আর ঐ দুই বন্ধনে হাইড্রোজেন  যুক্ত হবে। 

C2H4 + H2→ C2H6 

তাহলে এইটা কি ধরনের বিক্রিয়া হবে? সংযোজন বিক্রিয়া। তার মানে অসম্পৃক্ত যৌগরা সংযোজন বিক্রিয়া ঘটায়। (ইথাইনের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য, কেন? তা একটু ভাবলেই বুঝা যাবে) 



এখন আসি, খুব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে:

১. সম্পৃক্ত জৈবযৌগরাই প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটায়,

২. অসম্পৃক্ত জৈবযৌগরা সংযোজন বিক্রিয়া ঘটায়। 


যেহেতু, অ্যারোমেটিক যৌগরা অসম্পৃক্ত তাই তাদের কি ধরনের বিক্রিয়া দেওয়ার কথা? অবশ্যি সংযোজন। কিন্তু মার্ক টোয়েনের একটা কথা আছে না: “Reality is stranger than fiction”।  আর এখানেও ঐ একই কথা প্রযোজ্য। 


“Reality is stranger than logic!” আমাদের যুক্তি বলছে অ্যারোমেটিকদের সংযোজন বিক্রিয়া দেওয়ার কথা, কিন্তু তারা দেয় প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া! অসম্পৃক্ত হওয়া সত্ত্বেও তারা কিভাবে এটা করে? তাহলে কি আমাদের যুক্তিতে কোনো ভুল আছে, নাকি গোড়ায় গলদ? 



২. ক্যানিবাল ভাইপার

 

এখন আমি এমন এক সাপের কথা বলব, যে কিনা নিজেই নিজের লেজ কামড়ে ধরে! এটার সাথে অ্যারোমেটিক যৌগের কি সম্পর্ক? সেটা জানার আগে, অ্যারোমেটিক যৌগদের সংজ্ঞায়িত রূপটা জেনে নেই। 


“ বেনজিন ও বেনজিন ধর্মবিশিষ্ট হাইড্রোকার্বনকে অ্যারোমেটিক হাইড্রোকার্বন বলে।” 


এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বেনজিন! কেন এই একটা যৌগের উপর ভিত্তি করে একটা আস্ত শাখা তৈরি হলো। এটা আমরা দেখব, যুক্তি দিয়ে। তার জন্য ইতিহাস জানা লাগবে, কিভাবে আবিস্কৃত হলো এই বেনজিন? 


ঘটনা ১৮২৫ সালের, মাইকেল ফ্যারাডে প্রথম বেনজিন আবিষ্কার করেন। কিন্তু তখনও সেটা বেনজিন নামে খ্যাতি পায় নি। তার ঠিক ৯ বছর পর বিজ্ঞানী মিসচারলেক বেনজোয়িক  আঠা থেকে "বেনজিন" কে পুনরায় আবিষ্কার করেন, এবং তার কল্যানে বেনজিন খ্যাতি পায়। বিজ্ঞানীরা আণবিক ভর, শতকরা সংযুতি থেকে বেনজিনের সংকেত আবিষ্কার করেন C6H6। এই পর্যন্ত সব ঠিক থাকলেও ঝামেলাটা হয় বেনজিনের গাঠনিক কাঠামো নিয়ে। ছয়টা কার্বন আর ছয়টা হাইড্রোজেন নিয়ে প্রায় ১০ টার মতো গঠন আঁকা যায়। নিচে কয়েকটা উদাহরণ দেই, 


এখন প্রশ্ন হলো, বাস্তবে কোনটা পাওয়া যায়? আর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব পরীক্ষা নিরিক্ষার মাধ্যমে। এই সমস্যা সমাধানে সর্বপ্রথম সফল হন বিজ্ঞানী অগাস্ট কেকুল। তিনি ছিলেন নব্বই দশকের সেরা রসায়নবিদদের একজন। বলা হয়, তার কাছে সমস্যা নিয়ে গেলে কেউ কখনো খালি হাতে ফেরে না। যেহেতু ঐসময় বেনজিন খুবই মাথা খারাপ করা একটা সমস্যা। তাই সেটা সমাধানের চেষ্টা করছিলেন তিনি। বলা যায়, এটা সত্যিকার অর্থেই কেকুলের মাথা খারাপ করে দিয়েছিল। একদিন রাতে এমন উত্তেজিত মস্তিষ্কে তার বাড়িতে ফায়ার প্লেসের সামনে বসে আরাম করছিলেন কেকুল। আর তখনি এক অদ্ভুত ব্যাপার ঘটল। তিনি দেখলেন আগুনের ফুলকিগুলো একত্রিত হয়ে একটা সাপ হয়ে গেল। আর সে নিজেই নিজের লেজ কামড়ে ধরল এবং পরক্ষণেই ঐ সাপ পরিণত হলো বেনজিনের চাক্রিক গঠনে! কেকুল ধড়মড় করে ঘুম থেকে উঠে লেগে গেলেন বেনজিনের চাক্রিক গঠন দাঁড়া করাতে। আর তিনি সফলও হলেন, তিনি বেনজিনকে একটা চাক্রিক যৌগ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করলেন, যার ছয়টা কার্বনে ছয়াটা হাইড্রোজেন আর একটার পর একটা কার্বনে দ্বিবন্ধন বিদ্যমান। এই ধারণা নিয়ে দুইটা গঠন সম্ভব। কোনটা বাস্তবে পাওয়া যায়, সেটাই হলো দেখার বিষয়!




৩. নিষ্ঠুর বাস্তবতা


বেনজিনের চাক্রিক যৌগ যে দুইটা সম্ভব সেটা তো আগে দেখলাম এখন দেখব কোনটা প্রকৃতিতে পাওয়া যায়। আর তার জন্য একটা বহুল ব্যবহৃত বিক্রিয়া ঘটাতে হবে তা হলো হাইড্রোজেন সংযোজন বা হাইড্রোজিনেশন। আর আমরা যেই পরীক্ষা করব তার নাম "বেনজিনের হাইড্রোজিনেশন"। হাইড্রোজিনেশনের একটা হালকা ধারণা দেওয়া প্রয়োজন এখানে। শুরুতে আমরা কিন্তু ইথিন থেকে ইথাইন বানিয়েছিলাম। হাইড্রোজেন সংযোজন করে। আর সেখান থেকে একটা ধারণা পেয়েছিলাম যে, হাইড্রোজিনেশন করলে অসম্পৃক্ত যৌগ সম্পৃক্ত বা স্থিতিশীল হয়। কেন সম্পৃক্ত যৌগ স্থিতিশীল সেটা আগের পর্বে দেখানো হয়েছিল।  বেনজিনে তিনটা দ্বিবন্ধন আছে, ফলে হাইড্রোজিনেশন করলে সেটা সম্পৃক্ত একটা যৌগের গঠন পাবে। কি ধরনের সম্পৃক্ত সেটা পরে দেখা যাবে। এখান থেকে আরও কিছু বিষয় জানতে হবে, হাইড্রোজিনেশন বিক্রিয়ায় যে যত ভালোভাবে অংশ নিবে সে তত বেশি অস্থিতিশীল। কারণ স্থিতিশীল যৌগরা সহজে বিক্রিয়ায় অংশ নিবে না। আর হাইড্রোজিনেশন বিক্রিয়ায় পরিবেশে কিছু তাপ মুক্ত হয়,(কারণ বন্ধনের ভাঙা-গড়া চলে) তাই এটা একটা তাপ উৎপাদি বিক্রিয়া। আর কি পরিমাণ তাপীয় পরিবর্তণ হয়, তা থেকেই আমরা ধারণা নিতে পারব কোন গাঠনিক সংকেতটা বাস্তবে পাওয়া যায়। 


এখন আমরা মূল পরীক্ষাটায় প্রবেশ করব। আমরা তিন ধরনের যৌগ নিয়ে আগে হাইড্রোজিনেশন করব। সেই তিনটা যৌগ হলো, সাইক্লোহেক্সিন, সাইক্লোহেক্সাডিন আর বেনজিন। সাইক্লোহেক্সিনে একটা দ্বিবন্ধন আছে, সাইক্লোহেক্সাডিনে দুইটা আর বেনজিনে তিনটা। যদি একটা দ্বিবন্ধন ভাঙতে x পরিমাণ শক্তি বের হয়, তাহলে দুইটাতে 2x, আর তিনটাতে 3x পরিমাণ শক্তি বের হবে। ঠিক তো? আর যে যত বেশি শক্তি বের করে দিবে সে তত বেশি অস্থিতিশীল। কারণ বিক্রিয়া করার সময় অণু-পরমাণুদের অভ্যন্তরীণ শক্তিগুলো বিক্রিয়ায় অংশ নেয় যাদের স্থিতিশক্তি বলে। আর তাই কোনো অণু-পরমাণুতে অতিরিক্ত স্থিতিশক্তি জমা হলে সে তা মুক্ত করে দেয়। যেমন, গ্রাফাইটকে তাপ দিলে তার মধ্যে অতিরিক্ত স্থিতিশক্তি জমা হয়, একটা সময় সে অনেক বেশি অস্থিতিশীল হয়ে যায় এবং বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি করে। আর এই সময় সে যে পরিমাণ স্থিতিশক্তি গ্রহণ করে তার চেয়ে বেশি শক্তি প্রকৃতিতে মুক্ত করে। কিন্তু এই অতিরিক্ত শক্তি আসে কোথা থেকে? তার অভ্যন্তরীণ শক্তি শক্তি থেকে। আর যদি নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি গ্রহণ করে তার চেয়ে কম শক্তি মুক্ত করে তাহলে বলা যাবে, সে তার অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতায় তা ব্যবহার করেছে। 


আচ্ছা, এখন আমরা বুঝতে পারছি যে, সাইক্লোহেক্সিন, সাইক্লোহেক্সিডিন ও বেনজিনকে হাইড্রোজিনেশন করলে তারা অবশ্যি একটা সম্পৃক্ত যৌগের গঠন পাবে, আর ঐ যৌগটা হলো সাইক্লোহেক্সেন। (নাম নিয়ে ঝামেলায় পড়ার দরকার নেই। শুধু চিত্র দেখে বুঝে নিন, নামকরণ পরে আলোচনা করা যাবে)। এখন পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সাইক্লোহেক্সিনকে সাইক্লোহেক্সেনে পরিণত করতে বা একটা দ্বিবন্ধন ভাঙতে ২৮.৬ কিলোক্যালোরি/মোল শক্তি দরকার হয়। তাহলে দুইটা দ্বিবন্ধন ভাঙতে কি পরিমাণ শক্তি লাগবে? ২৮.৬×২ = ৫৭.২ কিলোক্যালরি/মোল, এটা হলো আমাদের থিওরীটিক্যাল এক্সপেকটেশন। আর বাস্তবেও এটার কাছাকাছি একটা মান পাওয়া যায়।  সেটা হলো ৫৫.৪ কিলোক্যালোরি/মোল। তাহলে বেনজিনের তিনটা দ্বিবন্ধন ভাঙতে কি পরিমাণ শক্তি লাগবে? থিওরিটিক্যালি সেটা হলো ২৮.৬×৩ = ৮৫.৮ কিলোক্যালোরি/মোল। কিন্তু বাস্তবতা এখানে নিষ্ঠুর! আসলে বেনজিনের বন্ধনগুলো ভাঙতে দরকার হয় ৪৯.৮ কিলোক্যালোরি/মোল শক্তি! কি অবাক কান্ড! আমরা প্রত্যাশা করেছি যত বাস্তবে সেটা থেকে ৩৬ কিলোক্যালোরি/মোল কম শক্তি পাওয়া যায়! দেখো, দুইটা দ্বিবন্ধন ভাঙতে যে পরিমাণ শক্তি লাগে আর থিওরী যে পরিমাণ শক্তির কথা বলে তা প্রায় কাছাকাছি। কিন্তু এখানে ত্রুটিটা নেহায়েত কম না।


আর যেহেতু বেনজিন, সাইক্লোহেক্সিডিনের চেয়ে কম শক্তি বের করে তার মানে কি? বেনজিন সাইক্লোহেক্সিডিনের চেয়েও বেশি স্থিতিশীল! এখানে তিনটা দ্বিবন্ধন থাকা সত্ত্বেও তা দুইটা দ্বিবন্ধনযুক্ত যৌগের চেয়ে বেশি স্থিতিশীল। কিন্তু কেন? এই অবস্থায় আমাদের আর আগের মতো ভাবলে চলবে না। নতুনভাবে শুরু করতে হবে। রিচার্ড ফাইনম্যানের একটা উক্তি আছে,“এটা কোনো ব্যাপার না যে, তোমার তত্ত্ব কত সুন্দর!যদি সেটা পরীক্ষা নিরিক্ষার সাথে না মেলে তাহলে সেটা ভুল।”


৪. বাস্তবতার কঠোর সিদ্ধান্ত 


তাহলে এই সমস্যার সুরাহা কি হবে? একটু আগে কিন্তু আমি বলেছিলাম। প্রত্যাশার চেয়ে কম শক্তি পাওয়া গেলে তা অণু-পরমাণুর স্থিতিশীলতায় কাজে লাগে। তার মানে ৩৬ কিলোক্যালোরি/মোল শক্তি বেনজিন তার স্থিতিশীলতায় কাজে লাগায়। কিন্তু কিভাবে? দেখো, আমি বলেছিলাম না, বেনজিনের চাক্রিক যৌগ দুইধরনের হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এর কোনোটাই আলাদাভাবে পাওয়া যায় না। পাওয়া যায় ঐ দুইটা গঠনের একটা মিশ্রণ বা হাইব্রিড রূপে। অর্থাৎ দ্বিবন্ধনে অংশ নেওয়া ইলেকট্রনগুলো কোনো নির্দিষ্ট কার্বনে আবদ্ধ না থেকে তারা পুরো যৌগে ঘোরাঘুরি করে। আর এই ঘোরাঘুরির জন্যই ঐ ৩৬ কিলোক্যালোরি/মোল শক্তি খরচ হয়। এই যে ইলেক্ট্রনগুলো ঘোরাঘুরি করে এটাকে বলে রেজোন্যান্স করা, আর এই ৩৬ কিলোক্যালোরি/মোল শক্তিকে বলে রেজোন্যান্স এনার্জি। যেহেতু ইলেকট্রনগুলো সম্পূর্ণ যৌগে রেজোন্যান্স করে তাই তাদের সাথে সহজে বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যায় না। আর এই কারণেই অ্যারোমেটিকরা অধিক স্থিতিশীল হয় এবং প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটায়। এই রেজোন্যান্স এনার্জির কারণেই অ্যারোমেটিকরা অসম্পৃক্ত হওয়া সত্ত্বেও সকলের চেয়ে ভিন্ন! এখানে আমার আরও কিছু কথা বলা উচিত। আমরা যতটা সহজে এই গঠনটা বোঝার চেষ্টা করলাম, সেটা আবিষ্কার কিন্তু এতটাও সহজ না! যেমন কেকুল কিভাবে চাক্রিক গঠন দাঁড়া করালেন? বেনজিনের শুধু একটা বিক্রিয়া আমি দেখিয়েছি, কিন্তু আবিষ্কারের সময় আরও নানান কিছু করতে হয়েছে। যেমন আমি আগেই বলেছিলাম, বেনজিন প্রতিস্থাপন বিক্রিয়া ঘটায়। তাহলে বেনজিনের হাইড্রোজেন সংযোজন হয় কিভাবে? আসলে এটা বলা যায় অনেকটা জোর করে করানো হয়। অর্থাৎ অন্য সব অসম্পৃক্ত যৌগ যত চাপে, তাপে এই বিক্রিয়া ঘটায়। বেনজিনের বেলায় সেটা ঘটাতে বহুগুণ বেশি চাপ ও তাপ লাগে! আমি আসলে সহজে বোঝানোর জন্য ঐ কিছু জিনিস এড়িয়ে গেছি। যদি কেউ এই লেখা পড়ে আরও বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হয়, তবে সেটাই আমার প্রাপ্তি হবে! 


 এখান থেকে কিন্তু আরেকটা সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, 

“নিজের ভাবনাকে, ধ্যান-ধারণাকে কখনো পরম বলে আঁকড়ে ধরতে নেই। কারণ প্রকৃতি নিজেই পরিবর্তনশীল। আমরা যা জানি, যা স্বীকার করি তা কেবলই কিছুক্ষণের জন্য সত্য, যতক্ষণ না তার ভিত নাড়িয়ে দেওয়ার মতো কিছু আবিষ্কৃত হয়!” 


তথ্যসূত্রঃ-

১. অন্যরকম পাঠশালা: Chemistry Mineral Resource


২.

The Discovery of Benzene | Nature


৩.

Chemistry_Organic Chemistry (Aromatic Compounds)_Sheikh Mohammad Arman - YouTube

Oyahidur Rahman Mohin

I am Mohin. Reading, writing and thinking are my passion. I usually write fiction and non-fiction for pleasure. And I am trying to touch the tune of life. "Life is really very simple but we insist on making it complicated."

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম